এক নজরে বাংলাদেশ
প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের খেলা শুরু
ঢাকা, ৯ ফাল্গুন (২২ ফেব্রুয়ারি):
প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৪ এর জাতীয় পর্যায়ের খেলা আজ ঢাকার মিরপুরে ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মোঃ মাসুদ রানা জাতীয় পর্যায়ের খেলার উদ্বোধন করেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব)আবু নূর মোঃ শামসুজ্জামান, পরিচালক (প্রশাসন) শাহীনুর শাহীন খান।
জাতীয় পর্যায়ের খেলায় অংশ নিচ্ছে দেশের আটটি বিভাগের চ্যাম্পিয়ন ৮টি বালক ও ৮টি বালিকা দল। ২২,২৩,২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে গ্রুপ, সেমিফাইনাল এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলা অনুষ্ঠিত হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে বালক-বালিকা দলের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ৬৫ হাজার ৩৫৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বালক-বালিকা দল টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের খেলা শেষে জাতীয় পর্যায়ের খেলা হচ্ছে।
মৎস্যকে শিল্প বানালে এর মূল চরিত্র নষ্ট হয়ে যাবে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
ঢাকা, ৯ ফাল্গুন (২২ ফেব্রুয়ারি):
মৎস্যকে শিল্প বানালে মূল চরিত্র নষ্ট হয়ে যাবে জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, তরুণেরা মৎস্যখাতে কাজ করার জন্য যে আগ্রহ দেখাচ্ছে, এটা অত্যন্ত উৎসাহের বিষয়। মৎস্যকে শিল্প বানালে এর মূল চরিত্র নষ্ট হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিকভাবে ইন্ড্রাষ্টিয়াল ফুড প্রোডাকশনের যে ক্ষতিকারক দিক রয়েছে, সেটা অনেকভাবে প্রভাবিত করবে। আপনারা শিল্প না লিখে এন্টারপ্রেনার লিখেছেন খুশি হয়েছি। কারণ এন্টারপ্রেনার অনেক ক্রিয়েটিভ কাজ করে।
উপদেষ্টা আজ বাংলাদেশের মৎস্যখাতের উদ্ভাবন, টেকসই উন্নয়ন ও তরুণ উদ্যোক্তাদের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে দিনব্যাপী ‘ফিসারিজ এন্টারপ্রেনার সামিট-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
নতুন প্রজন্মকে পোল্ট্রি ও ভাতে বাঙালি বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘আমরা মাছে ভাতে বাঙালি বলি। কিন্তু আমাদের তরুণ প্রজন্মকি মাছে-ভাতে বাঙালি। ওরা কিন্তু পোল্ট্রি ও ভাতে বাঙালি হয়ে যায়। অনেক সময় ডিম আর মাংস ছাড়া খেতে চায় না। নতুন প্রজন্মকে মাছ খাওয়াতে হবে। তিনি আরো বলেন, ‘বাচ্চাদের ছোট মাছ খাওয়ানো শিখাতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, পানি দূষণ ও জলাশয় ভরাটের কারণে মাছ উৎপাদন ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের দেশে এতো বৈচিত্র্যময় মাছ আছে। এর সঙ্গে বৈচিত্র্যময় পরিবেশও আছে। তবে দুঃখের বিষয় আমাদের নদীগুলো দূষিত হয়ে গেছে। কৃষিতে কীটনাশকের ব্যবহার বেড়েছে। আমাদের জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আর এভাবে চলতে থাকলে মাছ টিকবে না। সমস্যাগুলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট হওয়ায় সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য দেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন যেন আমরা করতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়া হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন বিজম্যান মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্হাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সুরাইয়া আখতার জাহান, বিজম্যান মিডিয়া লিমিটেডের প্রধান উপদেষ্টা মো. আবু বকর সিদ্দিক, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ প্রমুখ।
সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় যাকাত গুরুত্বপূর্ণ: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ঢাকা, ৯ ফাল্গুন (২২ ফেব্রুয়ারি):
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় যাকাত এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাপী সমাজ ব্যবস্থায় যাকাতের সৌন্দর্য ও প্রভাব রয়েছে।
আজ রাজধানীর আলোকি কনভেনশন সেন্টারে ‘Role of Islamic Social Finance in Economic Empowerment and Human Development’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, সম্পদ বন্টনের যে প্রক্রিয়াগুলো সবচেয়ে বেশি অনুস্মরণীয় তার অন্যতম সঠিক পদ্ধতি যাকাত। যাকাত প্রদানে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে এবং সমাজে যাকাতের প্র্রভাব দৃশ্যমান করতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, যাকাত দারিদ্র বিমোচনের একটি কার্যকর প্রক্রিয়া। নৈতিকতা বিহীন নেতৃত্ব তৈরি হলে সম্পদের সুষম বন্টন হবেনা। আমরা সুষম সমাজ চাই-নৈতিক নেতৃত্ব চাই।
তিনি বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ট্যাক্সেশন সিস্টেম যদি সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যাবেনা। এখন মানুষের সাফল্যকে বিচার করা হয় তার ভোগ সক্ষমতাকে দিয়ে। তাঁর আত্মসম্মান, শ্রদ্ধা ও সামাজিক দায়কে বিচার করা হয়না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, সমাজের বৈষম্য দূর করার জন্য জুলাই অভ্যুত্থানে অনেক তাজা প্রাণ দিতে হয়েছে, অথচ বৈষম্য এখনও রয়েগেছে। এর মূলোৎপাটন করতে হলে আমাদের সম্পদের সুষম বন্টন অবসম্ভাবীভাবে প্রয়োজন। এর নিয়ামক হিসাবে আমাদের নৈতিক ও ধর্মীয় দায় সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সেমিনারে কী নোট উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোইকোনমিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এর ড. এম এমরানুল হক। অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান এর সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তৃতা করেন ওয়ার্ল্ড যাকাত এন্ড ওয়াকফ এর সেক্রেটারি জেনারেল দাতুক ড. মোহাম্মদ গাজালি নূর।
সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইকনমিকস ডিপার্টমেন্ট এর প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক,তারবিয়াহ এডুকেশন নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোখতার হোসেন, সিজেডএমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিষদের আহ্বায়ক কনভেনার এবং রহিম-আফরোজ গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মুনওয়ার মিসবাহ মঈন।
এর আগে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ত্রয়োদশ যাকাত ফেয়ার ২০২৫ এর উদ্বোধন করেন। সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) ২ দিনব্যাপী যাকাত ফেয়ার আয়োজন করে। এখানে বিভিন্ন আর্থিক ও যাকাত প্রতিষ্ঠানের স্টল, যাকাতের হিসাব নিরুপণ ও যাকাত সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দানের জন্য কনসালটেশন ডেস্ক ও ইসলামি বইয়ের স্টল রয়েছে। আগামীকাল ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ফেয়ার সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ১ম কনভোকেশন
সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য পরিবেশের সুরক্ষা করতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
ঢাকা, ৯ ফাল্গুন (২২ ফেব্রুয়ারি):
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পরিবেশের সুরক্ষা আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। উন্নয়ন এমনভাবে করতে হবে, যাতে প্রকৃতির ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। প্রকৃতিকে পরাজিত করা যায় না, বরং তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবন গড়ে তুলতে হয়। পরিবর্তিত বিশ্বে আমাদের জীবনযাত্রাকে টেকসই করতে হবে।
উপদেষ্টা আজ রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সেনাপ্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স-এর প্রথম কনভোকেশন অনুষ্ঠানে কনভোকেশন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।
শব্দদূষণ ও পলিথিন দূষণ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাজ করার অনুরোধ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, শুধু নিজেদের ভবিষ্যৎ নয়, দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্বও নিতে হবে। শিক্ষার প্রকৃত মূল্যায়ন হয় তখনই যখন তা সমাজ ও দেশের উন্নয়নে কাজে লাগে। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিলেই সমাজ বদলাবে না, বরং বাস্তব কর্মের মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে আগামী দিনের বাংলাদেশ। তাই নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
সিস্টেমকে কার্যকর করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দায়িত্ব শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবা নয়, বরং সমাজ ও দেশকেও নিয়ে ভাবতে হবে। সেবা প্রাপ্তি সহজ করতে হবে, যেন সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়। এখন সময় এসেছে দেশের জন্য কাজ করার, সমাজের জন্য অবদান রাখার। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি সমৃদ্ধ ও টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।
সামাজিক পরিবর্তন প্রসঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা প্রায়ই অন্যের ওপর দোষ চাপাই, কিন্তু নিজেরা বদলাতে চাই না। সরকার একা পরিবর্তন আনতে পারবে না, আমাদের প্রত্যেককেই পরিবর্তনের অংশ হতে হবে। আমাদের অবস্থান থেকে সচেতন হলেই একটি সুন্দর ও টেকসই বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।
কনভোকেশনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী প্রফেসর ড. এম. আমিনুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি সাবেক নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল (অব.) ফরিদ হাবিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এনামুল বাসার এবং কনভোকেশন স্পিকার ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে কৃতি শিক্ষার্থী ও গোল্ড মেডালিস্টদের মাঝে সনদ ও পদক বিতরণ করেন।
টরন্টোয় মহান শহিদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
কানাডা (টরন্টো) (২২ ফেব্রুয়ারি):
কানাডার টরন্টোয় গতকাল বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে যথাযথ মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রবাসী বাংলাদেশি ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে কনসাল জেনারেল মোঃ ফারুক হোসেন টরন্টোর ডেন্টোনিয়া পার্কে শহিদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে, কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ, শিক্ষক, গণমাধ্যমকর্মী, টরন্টোয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে, প্রধান উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। এছাড়া, শহিদ দিবসের ওপর ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
কনসাল জেনারেল মোঃ ফারুক হোসেন তার বক্তব্যের শুরুতে ভাষা শহিদসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্দোলনে সকল শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এক নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। যার মাধ্যমে সকল অন্যায় ও বৈষম্যের প্রতিবাদ এবং সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ এসেছে।
নিউইয়র্কে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
নিউইয়র্ক, ২২ ফেব্রুয়ারি :
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল গতকাল যথাযথ মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ উদ্যাপন করেছে। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন পেশাজীবী, সাংবাদিক, নতুন প্রজন্ম ও কমিউনিটি সদস্যসহ বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। ৫২’র সকল ভাষা শহিদ এবং ’৭১ ও ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টে সকল শহিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এসময় ‘ইকোনোমিস্ট‘স কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার ২০২৪’ ও ‘জুলাই অনির্বাণ’ নামে দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
কনসাল জেনারেল মোঃ নাজমুল হুদা তাঁর স্বাগত বক্তব্যে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। উন্মুক্ত আলোচনায় নিউইয়র্কে বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটির শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয়।
ইতোপূর্বে কনসাল জেনারেল দিবসটি উপলক্ষ্যে সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন এবং বাংলাদেশ সোসাইটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে একুশের প্রথম প্রহরে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
কোপেনহেগেনে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
কোপেনহেগেন (ডেনমার্ক), ২২ ফেব্রুয়ারি:
ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে যথাযথ মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বিকালে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের সুচনা হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন ডেনমার্কে বসবাসকারী বাংলাদেশ কমিউনিটির সন্মানিত সদস্যবৃন্দ ও দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সমবেত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এরপর ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহিদদের মহান আত্মত্যাগ ও তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বানী পাঠ করা হয়।
দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। ডেনমার্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত একেএম শহীদুল করিম তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ অন্যান্য আন্দোলনকারীর অবদান অপরিসীম। এ আন্দোলনের মধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ নিহিত ছিল। ইউনেস্কো কর্তৃক ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনের রজত জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিশ্বের টেকসই উন্নয়নে ভাষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মাতৃভাষা বাংলার প্রতি ভালবাসা প্রকাশ ও বাংলা ভাষা ব্যবহারের প্রচার ও প্রসারের পাশাপাশি তিনি সবাইকে বিশ্বের অন্যান্য ভাষার প্রতি আগ্রহ প্রদর্শনের জন্য উৎসাহিত করেন এবং বহুভাষা শেখার গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করেন।
ভাষা শহিদদের নিয়ে কবিতা আবৃত্তি করে শোনান দূতাবাসের মিনিস্টার মুহাম্মদ সাকিব সাদাকাত। এরপর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়।
ব্রাসিলিয়ায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
ব্রাসিলিয়া (ব্রাজিল), ২২ ফেব্রুয়ারি:
যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিনম্র শ্রদ্ধায় দক্ষিণ আমেরিকাতে ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে পালিত হয়েছে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য-‘Make languages count for sustainable development’।
ব্রাসিলিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে কর্মসূচির প্রথমেই ’৫২-এর ভাষা শহিদ ও জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত সকলের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। এছাড়া, কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে প্রেরিত দুটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
পরে, চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মোঃ জসীম উদ্দিন অস্থায়ী শহিদ মিনারে দূতাবাসের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এসময় উপস্থিত সকল প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দূতাবাস পরিবারের সকল সদস্য শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ভিয়েতনামে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
হ্যানয় (ভিয়েতনাম), ২২ ফেব্রুয়ারি:
ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে গতকাল যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ পালন করা হয়েছে।
জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিবসটির প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া, মহান একুশের ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
পরে, দূতাবাসের কনফারেন্স রুমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের থিম সংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। এতে হ্যানয়ে বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকবৃন্দ, ইউনেস্কো অফিসের শিক্ষাবিষয়ক প্রতিনিধি, ভিয়েতনামের সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পর্যটন বিষয়ক প্রতিনিধি এবং ভিয়েতনামে অবস্থিত প্রবাসি বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমান এবং হ্যানয়ে ইউনেস্কো অফিসের শিক্ষাবিষয়ক প্রতিনিধি মিকি নযাবা। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যের শুরুতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদগণকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। শিক্ষাবিষয়ক প্রতিনিধি দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘Make Languages count for Sustainable Development’ উল্লেখ করে বলেন, জাতিসংঘ উন্নয়ন অভিষ্ট লক্ষ্য-৪ অন্তর্ভুক্তিমূলক, গুণগত এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের বিকল্প নেই। অথচ আজ বিশ্বে অনেক শিশু মাতৃভাষায় শিক্ষার গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত। তিনি বিশ্বের সকল শিশুর জন্য মাতৃভাষায় শিক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান ।
আলোচনা পর্ব শেষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মানে হ্যানায় বেশ কয়েকটি দূতাবাস থেকে তাদের মাতৃভাষায় প্রাপ্ত ভিডিও পারফর্মেন্স প্রদর্শন করা হয়। ভিয়েতনামে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইটো নাওকি বাংলা ভাষায় সংগীত পরিবেশন করেন। রাশিয়া দুতাবাসের কূটনীতিক আন্দ্রে বোরোডেনকো এবং ভিয়েতনামে বসবাসরত প্রবাসি বাংলাদেশি নাগরিক জুনায়েদ সিদ্দিকি রাশিয়ান এবং বাংলা ভাষায় কবিতা আবৃত্তি করে শোনান। এছাড়া, মায়ের ভাষায় অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য আয়োজন করা হয় ‘দেয়াল লিখন উৎসব’। এতে বিভিন্ন ভাষাভাষীদের লেখনীতে বিভিন্ন ভাষার মিলনমেলায় পরিণত হয় দূতাবাস প্রাঙ্গণ।