Home Bangla News এক নজরে বাংলাদেশ

এক নজরে বাংলাদেশ

0

ঢাকা ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫:

উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বড় অন্তরায় হচ্ছে জলবায়ুর প্রভাব:  উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

ঢাকা, ৩ ফাল্গুন (১৬ ফেব্রুয়ারি):

সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, আমাদের দেশের প্লাবনভূমি, হাওর, উপকূল এবং পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বড় অন্তরায় হচ্ছে জলবায়ুর প্রভাব। দেশের তিন ভাগের এক ভাগ উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নের জন্য আমাদের দেশের বাজেট পর্যাপ্ত নয়, ফলে তাদের জীবনমান উন্নয়নে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।

আজ ঢাকায় স্থানীয় একটি হোটেলে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘সহিংসতার শিকার প্রতিবন্ধী নারীদের বিচার প্রাপ্তি বিষয়ক গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।  

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে এমন কতগুলো উপকূল আছে যেখানকার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। তিনি বলেন, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে এমন কতগুলো মৌলিক কাজে হাত দিতে হবে, যা তাদের জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখে।

উপদেষ্টা আরো বলেন, জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। এ দায়িত্ব থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরো জোরালোভাবে উপস্থাপন করতে হবে যাতে বিশ্ববাসী জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের অবদান স্মরণ রাখে।

এ সময় মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন পরিবেশ বিজ্ঞানী আহসান উদ্দিন আহমেদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য পারভীন মাহমুদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেন দূতাবাসের উন্নয়ন সহযোগিতা কর্পোরেশনের প্রধান মারিয়া স্ট্রিডসম্যান, ইউএসএআইডি-এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, গবেষণা কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিবর্গ তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

মহিষের দইকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য কাজ করতে হবে :মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ঢাকা, ৩ ফাল্গুন (১৬ ফেব্রুয়ারি):

            মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মহিষের মাংসে কোলেস্টেরল কম, তাই মহিষের মাংসকে জনপ্রিয় করতে হবে। দেশের নানা স্থানে মহিষের দুধ থেকে তৈরি দইয়ের নানা বৈচিত্র্য দেখা যায়। মহিষের দইকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য কাজ করতে হবে। মহিষ পালনকারী খামারিদের সকল প্রকার সহাযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে, সংগৃহীত তথ্য নিয়ে গবেষণা করতে হবে।য

উপদেষ্টা আজ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) বাস্তবায়নাধীন মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন বাস্তব। তাই এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এমন প্রাণী হিসেবে মহিষকে অনেক গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। মহিষ বৈষম্যের শিকার হওয়া একটি প্রাণী। তাই মহিষ পালনকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কমিউনিটি পর্যায়ে কাজ করতে হবে। অভিজ্ঞ খামারিরা মহিষের হিটে আসা শনাক্ত করতে পারেন, মহিষ সংক্রান্ত নানাবিধ জ্ঞান ধারন করেন। তাদের জ্ঞানকে বিজ্ঞানের ভাষায় প্রকাশ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প শেষে গবেষণা কার্যক্রমগুলোকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেনো কোন গ্যাপ না থাকে।

উপদেষ্টা আরো বলেন, এ ধরণের গবেষণা হচ্ছে বলেই আমরা মহিষ সম্পর্কে জানতে পারছি। একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে তাদের আচরণ কি হবে তা নির্ভর করবে প্রতিষ্ঠানকে তারা কিভাবে দেখে। সেক্ষেত্রে বিএলআরআই-এর প্রতি গবেষকদের আবেগ, ভালোবাসা আমাদের মুগ্ধ করেছে। প্রাণিজ আমিষের ক্ষেত্রে বিএলআরআই-এর গবেষণার ফলাফল জনগণকে জানানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরণের গবেষণার ফলাফল ছোট পরিসরে নয় বরং আরো বড় পরিসরে হওয়া উচিৎ। তিনি প্রতিষ্ঠানটির নানাবিধ সংকট নিরসনে মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসও ব্যক্ত করেন।

বিএলআরআই-এর মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবু সুফিয়ান। এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন বিএলআরআই-এর অতিরিক্ত পরিচালক ড. এ বি এম মুস্তানুর রহমান। এরপর মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, অগ্রগতি ও অর্জন তুলে ধরেন উক্ত প্রকল্পটির প্রকল্প পরিচালক ও বিএলআরআই-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গৌতম কুমার দেব। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএরআরআই-এর সাবেক মহাপরিচালকগণ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ এবং বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

শহিদ মোবারক স্পোর্টস টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ঢাকা, ৩ ফাল্গুন (১৬ ফেব্রুয়ারি):

আজ রাজধানীর কলাবাগান খেলার মাঠে শহিদ মোবারক স্পোর্টস টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়  এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের  উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

এ সময় উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে ফ্যাসিবাদী শক্তির পতন হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের এবং শহিদদের নাম আমরা সকল কর্মকাণ্ডে জড়িত করবো; তাঁদের আমরা সর্বদা স্মরণে রাখবো।

উপদেষ্টা বলেন, খেলাধুলা আমাদের মধ্যে পজিটিভ এনার্জি  তৈরি করে। খেলাধুলা তরুণ সমাজকে  মাদকমুক্ত রাখে এবং  আদর্শ তরুণ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখে। ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠের অভাব রয়েছে, অনেক মাঠ দখল হয়ে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দখলকৃত মাঠগুলো পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, সকল মাঠ উদ্ধার করা সম্ভব না হলেও আমরা এই সময়ের মধ্যে চোখে পড়ার মতো খেলার মাঠ উদ্ধার করতে পারবো বলে আশা করছি।

আসিফ মাহমুদ আরো বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঢাকা নর্থ সিটিকে একটি মডেল সিটিতে রূপান্তর করার উদ্যোগ গ্রহণ করছে,  যাতে করে সকল নগরবাসী এর সুফল পায় এবং সুন্দর নগর জীবনের প্রতিফলন ঘটাতে পারে।

গণমাধ্যমের দায়িত্ব সরকারের ভুলত্রুটি তুলে ধরা : পরিবেশ উপদেষ্টা

ঢাকা, ৩ ফাল্গুন (১৬ ফেব্রুয়ারি):

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, গণমাধ্যমের দায়িত্ব সরকারের ভুলত্রুটি এবং সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরা। সংবাদমাধ্যমের ফোকাস ঠিক রাখা জরুরি। অনেক সময় এটি নষ্ট হয়ে যায়। তিনি বলেন, সরকার খাল খনন করে, কিন্তু খননের পর অনেক সময় সেই মাটি সরানো হয় না। ফলে খালগুলো আবার ভরে যায়। এসব বিষয় সরকারের নজরে আনতে হবে।

আজ রাজধানীর গুলশানে দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন আয়োজিত ‘ফান্ডামেন্টালস অব জার্নালিজম: প্রফেশনাল অ্যান্ড টেকনিক্যাল স্কিলস ফর ইমার্জিং জার্নালিস্টস’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, জনগণ সব পত্রিকা পড়েন না। তারা সে সব পত্রিকা পড়েন, যা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে। সংবাদপত্রের মাধ্যমে স্বার্থের দ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলতে হবে। তিনি আরো বলেন, জাতি গঠনের এই সময়ে কোথায় সংস্কার প্রয়োজন, তা গণমাধ্যম জানাতে পারে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বুড়িগঙ্গার তলদেশ ২-৫ মিটার পর্যন্ত প্লাস্টিক ও পলিথিনে ভরে গেছে। মাইক্রো প্লাস্টিক মানুষের মস্তিষ্কে পর্যন্ত প্রবেশ করছে। অথচ প্লাস্টিকের বিকল্প রয়েছে। তাহলে কেন তা ব্যবহার করা হবে না?’ তিনি আরো বলেন, অহেতুক হর্ন বাজানো বন্ধ করতে হবে। চালকদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। পরিবেশ রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষায় সাংবাদিকদের লিখতে হবে। সেখানকার মানুষের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাও জরুরি।’

অনুষ্ঠানে স্বদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক, সম্পাদক, সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের মাঝে প্রশিক্ষণ উপকরণ বিতরণ করেন এবং বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক-২০২৫: দেশি-বিদেশি ৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মনোনীত

ঢাকা, ৩ ফাল্গুন (১৬ ফেব্রুয়ারি):

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক-২০২৫ প্রদানের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি ৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন ও বিকাশে ভূমিকা রাখায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক-২০২৫ এর জন্য মনোনীত হয়েছেন ভাষাবিজ্ঞানী ও ভাষা গবেষক অধ্যাপক আবুল মনসুর মুহম্মদ আবু মুসা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্তর্জাতিক পদক-২০২৫ এর জন্য মনোনীত হয়েছেন Joseph  David Winter; তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জীবনানন্দ দাশের রচনাবলি অনুবাদ, বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিকীকরণ ও প্রসারে ভূমিকা রাখেন। বাংলাদেশ দূতাবাস, প্যারিস; মহান ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে ইউনেস্কো কর্তৃক ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি প্রদানে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে এ প্রতিষ্ঠান।

মাতৃভাষার চর্চা, সংরক্ষণ, বিকাশ ও গবেষণা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশি ও বিদেশি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্তর্জাতিক পদক’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রদান করা হয়ে থাকে। পদকের সংখ্যা ৪টি (জাতীয় ক্ষেত্রে ২টি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ২টি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা)। পদক হিসেবে ১৮  ক্যারেট মানের ৩৫  গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র এবং চার লাখ টাকা কিংবা সমমূল্যের ডলার প্রদান করা হয়। শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫-এ প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক ২০২৫ (জাতীয় ও আন্তর্জাতিক) প্রদান করবেন।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহিদদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা প্রদান করা হয়।

এ বছর বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতিদানের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ২১শে ফেব্রুয়ারি ইউনেস্কো আয়োজিত অনুষ্ঠানে অনলাইনে শুভেচ্ছাবার্তা প্রদান করবেন।

নদী পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাইলেন পানি সম্পদ উপদেষ্টা

ঢাকা, ৩ ফাল্গুন (১৬ ফেব্রুয়ারি):

          পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশকে নদী পুনরুদ্ধারের সফল উদাহরণ হিসেবে গড়ে তুলতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চেয়েছেন।

          আজ ঢাকার পানি ভবনে অনুষ্ঠিত ‘নদী পুনরুদ্ধার: বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা’ শীর্ষক জ্ঞান বিনিময় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, দূষিত নদীগুলোও সুপেয় পানির উৎসে পরিণত হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ ক্ষেত্রে কার্যকর সমাধান দেখিয়েছে।

          উপদেষ্টা বলেন, বুড়িগঙ্গার জন্য ট্যানারির ক্রোমিয়াম দূষণ বড় চ্যালেঞ্জ। নীতি ও পরিকল্পনার পরিবর্তে দ্রুত বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট অভ্ ওয়াটার মডেলিংয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এডিবির সহায়তায় একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি।

          উপদেষ্টা আরো বলেন, ১৯৯৯ সালের পানি নীতি ও ডেল্টা পরিকল্পনার চলমান সংশোধন ভবিষ্যতের নদী পুনরুদ্ধারের কাঠামো হিসেবে কাজ করবে। পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো) ইতোমধ্যে উপত্যকার নদীগুলোর পুনরুদ্ধারের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে।

          পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে দূষণকারীদের চিঠি দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং সরকার শিল্প-কারখানার জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সহায়তা দিতে প্রস্তুত। নদী দখলদারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকাও সরকারের কাছে রয়েছে। প্রচলিত ড্রেজার দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সরানো সম্ভব নয়, এজন্য বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন। তাই পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কর্মপরিষদ গঠনের আহ্বান জানান তিনি।

          রিজওয়ানা হাসান বলেন, বর্ষাকালে নদীর স্বাভাবিক প্লাবন দূষণ কমাতে ভূমিকা রাখে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যথাযথ সম্পদ ও উদ্যোগ নিয়ে ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে সুরমার মতো নদীগুলোর পুনরুদ্ধার সম্ভব।

          তিনি নদীনির্ভর জনগোষ্ঠীকে পুনরুদ্ধার কর্মপরিকল্পনায় সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা কামনা করেন। তিনি প্রকল্পভিত্তিক নয়, প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানাধীন ধারাবাহিক নদী পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার ওপর জোর দেন। এডিবির সহায়তায় অন্তত একটি নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেন তিনি।

           সেমিনারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকার উত্তর সিটি করর্পোরেশনের নবনিযুক্ত প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ; বাংলাদেশে এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি হো ইউন জিয়ং ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান।

          এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এডিবির পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ ইয়াওঝো ঝোউ, ইয়াসমিন সিদ্দিকী, আও শিওন ইয়ি, জুয়েলিয়াং কাই, স্টেফান রাউ, এরিক কিনসিউ, অরুণ শুমশেরে রানা, কেনিচি ইয়োকোয়ামা প্রমুখ মতবিনিময় করেন।

বাংলাদেশকে বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড় হতে দেওয়া যাবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা

ঢাকা, ৩ ফাল্গুন (১৬ ফেব্রুয়ারি):


          পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশকে বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড় হতে দেওয়া যাবে না। জরুরি সংস্কার না হলে বাংলাদেশ বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হবে। তিনি জাহাজ ভাঙা শিল্পে কঠোর পরিবেশ আইন প্রয়োগ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

          উপদেষ্টা আজ ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ও বিপজ্জনক বর্জ্যব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় নিয়ন্ত্রক কাঠামো’ শীর্ষক কর্মশালায় এ আহ্বান জানান।

          রিজওয়ানা হাসান জাহাজ ভাঙা শিল্পের মানবিক ও পরিবেশগত ক্ষতির দিক তুলে ধরে বলেন, এ শিল্প মানবজীবনের বিনিময়ে চলতে পারে না। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জোয়ার-ভাটা অঞ্চলে জাহাজ ভাঙার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে এবং এ সিদ্ধান্তকে জাতীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এ শিল্প যদি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে না চলে, তাহলে এটি টিকিয়ে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। পরিবেশ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে বাংলাদেশকে বিষাক্ত বর্জ্যের ভাগাড় হওয়া থেকে রক্ষাসহ শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।

          উপদেষ্টা বলেন, জাহাজ ভাঙা শিল্পের শ্রমিকরা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে থাকেন, অথচ তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। তিনি পোশাক শিল্পের সঙ্গে জাহাজ ভাঙা শিল্পের তুলনা করে বলেন, পোশাক শিল্পে বিদেশি ক্রেতারা শ্রমমান বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কিন্তু জাহাজ ভাঙা শিল্পের মালিকরা তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যান। উপদেষ্টা প্রশ্ন করেন, যে দেশে ইস্পাতের বেশিরভাগ চাহিদা বিদেশ থেকে পূরণ হয়, সেদেশে এতো ঝুঁকি নিয়ে কেন জাহাজ ভাঙতে হবে?

          পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পরিবেশ আইন কার্যকর না হলে, এ শিল্প কেবল সবুজায়নের নামে বৈধতা পাবে। ইউরোপের কোম্পানি জাহাজগুলোকে ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রের নামে নিবন্ধন করে বাংলাদেশে পাঠায়। তিনি জানতে চান, ইউরোপের কোনো দেশে সমুদ্রতটে জাহাজ ভাঙার অনুমতি দেওয়া হয় কিনা। তিনি উল্লেখ করেন, কিছু শিপইয়ার্ড এখনো বৈধ পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই কাজ করছে, যেখানে সম্প্রতি একজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাই শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, পরিবেশ রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা কার্যকর করা জরুরি।

          অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মিলন উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার বাণী 

ঢাকা, ২ ফাল্গুন (১৫ ফেব্রুয়ারি):                                         

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের       ‘বার্ষিক সম্মিলন-২০২৫’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:   

 “বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ‘বার্ষিক সম্মিলন-২০২৫’ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

জননীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সদস্যগণ অসামান্য অবদান রাখেন। সরকার ও জনগণের সেতুবন্ধ হিসেবে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সদস্যদের ভূমিকা ঐতিহাসিকভাবে প্রতিষ্ঠিত।

অসংখ্য ছাত্র-জনতার শহিদী মৃত্যু, ত্যাগ এবং অবর্ণনীয় নির্যাতন সহ্য করার মধ্যদিয়ে ২০২৪ সালের
৫ আগস্টের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। এ বিপ্লব আমাদেরকে নতুন বাস্তবতা ও আকাঙ্ক্ষার মুখোমুখি করেছে। জনগণ একটি নতুন বাংলাদেশ আশা করে। সরকার এলক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে আশা করি যে, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সদস্যগণ দেশপ্রেম, নিষ্ঠা, সততা ও পেশাদারিত্বের সাথে সরকারের পরিকল্পনা ও সংস্কার বাস্তবায়নে যথাযথ ভূমিকা রাখবেন।  

আগামীর বাংলাদেশ যেন ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, মানবিক মর্যাদা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে পরিচালিত হতে পারে সেজন্য আমাদের সকলকে ভূমিকা রাখতে হবে। প্রজাতন্ত্রের সেবক হিসেবে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সদস্যগণের দায়িত্ব অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। আশা করি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সদস্যগণ এ অঙ্গীকার সর্বাবস্থায় মনে রাখবেন।

আমি বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ‘বার্ষিক সম্মিলন-২০২৫’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here